বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস।
৩ মে “ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে” বা “বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস” পালন করা হয়। জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালন করা হয়। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য নির্বারিত করা হয়েছে “ ভয় বা পক্ষপাতহীন সাংবাদিকতা"।
বিশ্বে মুক্ত গণমাধ্যমের সূচক বা ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম সূচক-২০১৯ এ বাংলাদেশের অবস্থান ১৫০তম। এ সূচক অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে নরওয়ে। তারা রয়েছে ১৮০টি দেশের মধ্যে এক নম্বরে।
১৯৯১ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে তারিখটি 'ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে' অথবা ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’র স্বীকৃতি পায়। সেই থেকে প্রতি বছর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবন হারানো সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
“সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন সকলের অধিকার”, এই স্লোগানকে সামনে রেখে পথ চলার কঠিন দায়িত্ব সাংবাদিকদের কাঁধে। সীমিত অধিকার, চাপ ও মৌলিক অধিকার হরণকারী ভীতির মধ্যে সংবাদকর্মীদের সব সময় কাজ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা, দুর্নীতিবাজরা গণমাধ্যমের কাজে নিয়মিত হস্তক্ষেপ করছে বলেও অভিযোগ আছে। একটা সংবাদের পিছনে যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর মেধায় আমাদের সবার সামনে সত্য প্রকাশ হয় তাদের সম্পর্কে এখনও আমরা যত্নশীল নই। বস্তুনিষ্ঠ ও সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে এখনও সুবিধাবাদীদের রক্তচক্ষু এমনকী শেষ পরিণতিতে নির্মম মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে।
মূলত আফ্রিকার সংবাদপত্রসমূহের ওপর একটি সেমিনারের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে এই দিবসটি। এই সেমিনারটি ১৯৯১ সালে নামিবিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বহুমুখিতা নিশ্চিত করতে 'উইন্ডহক ডিক্লারেশন' দেয়া হয়। এই উইন্ডহক ঘোষণার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে স্বাধীন ও বহুমুখী সাংবাদিকতা চর্চার নিশ্চয়তা দেওয়া। এই ঘোষণার মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতির গণতন্ত্র বিকাশের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা জরুরি। মূলত ৩ মে এই 'উইন্ডহক ডিকলারেশন' ঘোষিত হওয়ায় প্রতি বছর বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়।
তবে এই দিবসের ইতিহাস আরও পুরনো। ১৯৪৮ সালে প্রণীত ১৯তম ধারায় এই ঘোষণা করা হয় যে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হচ্ছে মানবাধিকারেরই অংশবিশেষ। ১৯৯৭ সাল থেকে ইউনেস্কো প্রতি বছরই তাদের 'গুইলারমো ক্যানো ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম প্রাইজ' দিয়ে আসছে কিংবা ওই সব সংগঠনকে সম্মান করতে যারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে রক্ষা করে কিংবা তা করতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ে। এই পুরস্কারের নামকরণ তাঁর নামে করা হয়, যিনি মাদক মাফিয়াদের প্রত্যাখ্যান করতে গিয়ে ১৯৮৬ সালে নিহত হন।
সম্পাদনা,
ড. এ আর খাঁন
আহ্বায়ক
ফেডারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি - এফডিপি
সবার আগে বাংলাদেশ
0 Comments