নিচের ছবিতে একটা যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন? এইটা হলো একটা বোকা বক্স।
এই বোকা বক্সের সাথে যদি আপনি বন্ধুত্ব করতে পারেন তাহলেই আপনি বস! 😉
আর তার সাথে বন্ধুত্ব করার, রাত জেগে তার সাথে গল্প করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে প্রোগ্রামিং। 🙂 আর আপনি যে ভাষায় প্রোগ্রামিং করবেন সেটাই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ।
আসুন জেনে নেই #প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং #ল্যাঙ্গুয়েজ কি?
প্রোগ্রামিং কি তা সহজে বললে, কম্পিউটারকে ইন্সট্রাকশন দেওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে প্রোগ্রামিং।
আরেকটু ভালো করে বলতে যে কোন অটোমেটেড মেশিনকে ইন্সট্রাকশন দেওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে প্রোগ্রামিং।
কম্পিউটারের কথা বলি, কম্পিউটার অন করলেই হাজার হাজার ইন্সট্রাকশন কাজ করা শুরু করে। আমরা কম্পিউটার অন করে মিউজিক শুনি, মিউজিক প্লেয়ার একটা প্রোগ্রাম। যার মধ্যে রয়েছে অনেক গুলো ইন্সট্রাকশন। আমরা গেম খেলি। এক একটা গেম এক একটা প্রোগ্রাম। রয়েছে অনেক হাজার হাজার ইন্সট্রাকশন। আর এই ইন্সট্রাকশন গুলো লেখার কাজই হচ্ছে প্রোগ্রামিং।
ইন্সট্রাকশন গুলো কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লিখতে হয়। যে নিয়ম গুলো মেনে প্রোগ্রাম লিখতে হয়, তা হচ্ছে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আমাদের নিজেদের ল্যাঙ্গুয়েজ এর মতই। আমরা ‘অ’, ‘আ’ দিয়ে ইচ্ছে মত কিছু বসিয়ে কোন শব্দ বলি না। কিছু নিয়ম মেনে বলি। কিছু গ্রামার রয়েছে। তেমনি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর ও গ্রামার রয়েছে। এ গ্রামার গুলো দেওয়া থাকে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে। আর ঐ ল্যাঙ্গুয়েজে দেওয়া নিয়ম গুলো মেনেই আমাদের প্রোগ্রাম লিখতে হয়।
আমরা যদি কোন প্রোগ্রাম দেখে থাকি, প্রথমে মনে হবে কিসব হাবি যাবি লেখা, এলিয়েনের ভাষা। কিন্তু আসলে এগুলো দারুণ। একবার নিয়ম গুলো জেনে পেললে যে কোন প্রোগ্রাম লিখে ফেলা যাবে। আর প্রোগ্রাম লিখে যে কোন কিছু করা যাবে। যে কোন কিছু, সব কিছু!
আমরা ছোটবেলায় ভিডিও গেম খেলেছি, কম্পিউটার গেমের আগে। ঐখানেও প্রোগ্রামিং এর ব্যবহার ছিল। ছোট ছোট গেম গুলো লেখার জন্য ভিডিও গেমকে ইন্সট্রাকশন দিতে হয়েছিল। ঐ ইন্সট্রাকশন গুলোও হচ্ছে প্রোগ্রামিং। আমরা এখন কম্পিউটার গেম খেলি। ভিডিও গেম থেকে অনেক উন্নত। আরো বেশি ইন্সট্রাকশন। প্রোগ্রামিং। আমরা টিভি দেখি। আমাদের টিভি গুলোতেও এখন অনেক গুলো প্রোগ্রাম রয়েছে। এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেলে যেতে, টিভি, ভিসিডি এ ইনপুট গুলো পরিবর্তন, পর্দায় ভিডিও দেখানো, এগুলোর জন্যও প্রোগ্রাম লিখতে হয়েছে। আমরা মুভি দেখি, এখনকার মুভি গুলোতে যতটুকু না ক্যামেরার কাজ, তার থেকে বেশি হচ্ছে আনিম্যাশনের কাজ। আর তা করা হয় প্রোগ্রামিং দিয়ে তৈরি করা কত গুলো সফটওয়ারের মাধ্যমে। ক্যামেরায় ছবি উঠানো, তার পেছনেও কাজ করে এই প্রোগ্রামিং। আমাদের হাতের ডিজিটাল ঘড়িটির পেছনে কাজ করে প্রোগ্রামিং।
আমরা মেডিকেলে গেলে আমাদের অনেক গুলো টেস্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঐ টেস্ট গুলো করা হয় অন্যে গুলো মেশিন দিয়ে। মেশিন গুলো কাজ করে কত গুলো ইন্সট্রাকশন এর উপর, প্রোগ্রামের উপর। কোন রোগ এনালাইসিস করার জন্য ব্যবহার করা হয় প্রোগ্রামিং। রোগ থেকে প্রতিশেষধক তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয় প্রোগ্রামিং।
আমরা এখন প্রায় পণ্যই ঘরে বসে কিনতে পারি। আমরা একটা ওয়েব সাইট ভিজিট করি, আমরা পেমেন্ট পরিশোধ করি, সব কিছুর পেছনেই এই প্রোগ্রামিং।
রোবট একটা জড় বস্তু যদি না তাতে কোন ইন্সট্রাকশন না থাকে। ইন্সট্রাকশন গুলো লেখা হয় প্রোগ্রামিং করে। আর কঠিন কঠিন সব কাজ করতে এই রোবট ব্যবহার করা হয়। এমনকি ন্যানো রোবট ব্যবহার করে মানুষের শরীরের ভেতরের কোন ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য এই রোবট ব্যবহার হয়। ব্যবহার করা হয় প্রোগ্রামিং এর।
এগুলো ছাড়াও আর হাজার হাজার ফিল্ড রয়েছে, যেখানে প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা হয়।
কম্পিউটারকে ইন্সট্রাকশন দেওয়ার জন্য যে নিয়ম মানা হয়, তা হচ্ছে কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ। কম্পিউটার আমাদের কথা বুঝতে পারে না। কম্পিউটার বুঝে শুধু ০ এবং ১। আর আমরা তো শুধু ০ এবং ১ দিয়ে কিছু প্রকাশ করতে পারি না। তো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আমাদের ইন্সট্রাকশন গুলকে কম্পিউটার বুঝার মত করে ০ এবং ১ এ পরিণত করে দেয়।
অনেক গুলো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং রয়েছে। কয়েক হাজার। কিন্তু সব গুলোর ব্যাসিক নিয়ম এক। একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এ প্রোগ্রামিং করতে জানলে বাকি যে কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে প্রোগ্রাম লেখা যায়। কয়কটি জনপ্রিয় ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে C, C++, Java, Phython, C# ইত্যাদি। প্রোগ্রামিং যে কেউ শিখতে পারে। যারা প্রোগ্রামিং পারে, তারা সব সময়ই স্পেশাল। যে কোন একটা ল্যাঙ্গুয়েজ পছন্দ করে আপনিও শুরু করতে পারেন প্রোগ্রামিং। হয়ে যেতে পারেন স্পেশাল দের একজন।😊
0 Comments